ইসরায়েলকে এবার কঠিন হুশিয়ারি দিল যুক্তরাজ্য
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ মে ২০২৫
ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। পাশাপাশি, পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি গড়ে তোলায় জড়িত কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি। এ পদক্ষেপ এসেছে এমন এক সময়ে, যখন যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং ফ্রান্স যৌথভাবে ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে—গাজায় হামলা থামানো ও ত্রাণ প্রবেশে বাধা না সরালে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইসরায়েল ৫ মে থেকে গাজায় নতুন করে অভিযান শুরু করে। সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, গাজা উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। দীর্ঘ অবরোধের পর ওই দিন মাত্র পাঁচটি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়া হয় গাজায়, যদিও গাজা প্রশাসনের দাবি—প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০ ট্রাক প্রয়োজন মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাতে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি মঙ্গলবার বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে সম্মান জানালেও, চলমান অবরোধ এবং সংঘাত এক গভীর সংকটময় পর্যায়ে পৌঁছেছে। ১১ সপ্তাহের অবরোধে গাজার খাদ্য পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (WFP) মতে, তাদের হাতে থাকা খাদ্যের মজুত ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।
সংসদে দেওয়া বক্তব্যে ল্যামি জানান, আজ যুক্তরাজ্য তিনজন ব্যক্তি ও চারটি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে, যাদের বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য কখনো মানবাধিকারের বিরুদ্ধে হওয়া কাজ মেনে নেবে না।
এছাড়া, ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গাজায় চলমান হামলা এবং পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন কার্যক্রম বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানাতে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত জিপোরাহ হোতোভেলিকে তলব করা হয়েছে।
তবে এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে “বিভ্রান্তিকর ও একপেশে” বলেছে। তারা দাবি করেছে, ইসরায়েল শুধু তার অস্তিত্ব রক্ষার জন্য লড়াই করছে এবং কোনো আন্তর্জাতিক চাপেই তারা এই লড়াই থেকে পিছিয়ে আসবে না।
বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করার প্রতিক্রিয়ায় তারা আরও বলে, “যুক্তরাজ্য যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নিজেদের অর্থনৈতিক ক্ষতি করতে চায়, তবে তা তাদের সিদ্ধান্ত।”

No comments: