দোয়ারাবাজারে ৯ম শ্রেণির ছাত্রীর ওপর পরিকল্পিত হামলা—জানা গেল নতুন তথ্য
গত বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দিবাগত রাত আনুমানিক ১২.৩০ টার দিকে দোয়ারা বাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের নতুন নগর গ্রামে সুরমা আক্তার(১৫) নামে নবম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। আহত শিক্ষার্থী সুরমা আক্তার বর্তমানে সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
প্রাথমিক ভাবে উক্ত ঘটনাটিকে ধর্ষণচেষ্টা বলে ধারণা করা হলেও, আজকে ২৫ অক্টোবর ভুক্তভোগীর চাচা মাহফুজ তার এক ফেসবুক পোস্টে ঘটনাটির অদ্যোপান্ত জানালেন। ভুক্তভোগীর চাচা তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, গত ২২ অক্টোবর দুপুরে তাদের বাড়িতে (করিমপুর) গেস্ট হিসেবে আসে সুরমা আক্তারের তিনজন বান্ধবী। তারা পাশের নতুন নগর গ্রামের বাসিন্দা। করিমপুর থেকে যার দূরত্ব পায়ে হেঁটে তিন-চার মিনিটের রাস্তা। এরপর সময় কাটিয়ে সুরমার তিন বান্ধবী সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করলে সুরমার পরিবার সবাই এতে বাধা দেন, তাদের তিন জনকে রাত্রে থেকে যেতে বলেন। কিন্তু তারা মোটেও থাকতে রাজি হয়নি। এরপর তারা সুমরাকে তাদের সাথে যেতে অনুরোধ করে, কিন্তু এতে সুরমার পরিবার রাজী হয়নি। কিন্তু তারা নাছোড়বান্দা হয়ে এক প্রকার জোরপূর্বক তারা সুরমাকে তাদের সঙ্গে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে রাত আনুমানিকে ১টার দিকে সুরমার মায়ের কাছে তার বান্ধবীর পরিবার থেকে একটা কল আসার পর পরিবারের লোকেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে সুরমা অজ্ঞান অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে । তার শরীড় তখন রক্তাক্ত এবং গুরুতরভাবে জখম ছিল।
চাচার বর্ণনা অনুযায়ী, আহত অবস্থায় সুরমাকে দ্রুত সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা বলেছিলেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় ইমার্জেন্সি পাঁচ ব্যাগ
রক্তের প্রয়োজন । জরুরি ভিত্তিতে ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহ করা হয়। সুরমার একাধিক কাটা ও চোটে জরুরি অস্ত্রোপচার চালানো হয়; অপারেশনের পড়ে বিপজ্জনক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর সুরমার চেতনা ফেরে।
জ্ঞান ফিরলে সুরমা পরিবারের কাছে ঘটনাটির বর্ণনা দেন। তার বলা অনুসারে হামলাটি পরিকল্পিত ছিল। সুরমা তার চাচাকে দেওয়া তথ্যমতে, ঘটনার দিন রাতে তারা বান্ধবীরা সবাই মিলে একটু দেরি করে খাবার খেয়ে একে অপরকে মেহেদী লাগিয়ে দিচ্ছিল। ঘরের সবাই সজাগ ছিল। তখন ওই পরিবারের একজন মহিলা পেছনের দরজা খুলে বের হয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই মুখ গামছা দিয়ে ঢেকে এক ঘাতক রুমে ঢুকে সুরমাকে এলোপাতড়ি কুপানো শুরু করে। সুরমার দাবী, আশেপাশে তখন তার বান্ধবীরা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা ছিল। শুরুতে কেউ তাকে বাঁচাতে আসেনি। এমনকি আঘাতের সময় সুরমা চিৎকার করলে পরিবারের সবাই তাকে চুপ করাতে বলেছিল এবং তার পরিবারকে ফোন না দিতে নির্দেশ দিয়েছিল—পরে সুরমা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ঘটনার পর গ্রামবাসী অভিযুক্ত কালা মিয়াকে আটক করে ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশাহিদ আলীর উপস্থিতিতে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায়।স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাহিদ আলী জানিয়েছেন, “এটি একটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। গ্রামবাসী এই অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি জানাচ্ছেন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন ঘটনা ঘটাতে না পারে।
আহত শিক্ষার্থী সুরমা আক্তার স্থানীয় সুরমা হাজি কনুমিয়া স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী। পরিবারের অনুরোধ,তারা দ্রুত এর সঠিক বিচার চান। বর্তমানে সুরমা চিকিৎসাধীন ও পরিবারের সান্নিধ্যে রয়েছেন; পরিবার অপরাধের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে জানা যায়।
পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও আহতের চিকিৎসা সুরক্ষার নিশ্চয়তার জন্য স্থানীয় থানায় অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে—পুলিশ এখন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত ও অভিযুক্তদের পরিচয় নির্ধারণে তল্লাশি করছে বলে পরিবারকে জানানো হয়েছে (পুলিশের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি)। হাসপাতালের পক্ষ থেকেও প্রাথমিক চিকিৎসা ও রক্ত যোগান সংক্রান্ত তথ্য মিলেছে,কিন্তু ঘটনার সম্পূর্ণ বিবরণ সম্পর্কে মেডিকেলে কর্তব্যরত কোনো ডাক্তারের বক্তব্য সংগ্রহ করা হয়নি। এলাকাবাসীদের দাবী - এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হয়ে দ্রুত এর সাথে জড়িত সকল অপরাধীদের আইনের আওয়তায় আনতে হবে।
দোয়ারাবাজারে ৯ম শ্রেণির ছাত্রীর ওপর পরিকল্পিত হামলা—জানা গেল নতুন তথ্য
Reviewed by প্রান্তিক জনপদ
on
10/25/2025 09:48:00 PM
Rating:
Reviewed by প্রান্তিক জনপদ
on
10/25/2025 09:48:00 PM
Rating:

No comments: